চর রাজিবপুরে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা ১৪৩২
- আপডেট সময় : ১০:৫১:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
- / 15
মোখলেছুর রহমান
রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুর উপজেলার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখ যথাযথভাবে পালিত।র্যালি ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) জনাব ফজলে এলাহী, রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব আমিনুল ইসলাম, রাজিবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) জাহাঙ্গীর আলম বাবু, চর রাজিবপুর টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুর রশিদ মন্ডল, রাজিবপুর উপজেলা যুবদলের আহবায়ক রুস্তম মাহমুদ লিখন, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিরন মোঃ ইলিয়াস সহ প্রশাসনের সমস্ত কর্মকর্তা কর্মচারী, সাংবাদিকগন ও সাধারণ জনগণ।
<এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে এলাহী পহেলা বৈশাখের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
তিনি আরও বলেন পহেলা বৈশাখ প্রতিটি বাঙালির কাছে এক অনন্য অনুভূতি, আবেগ। নতুন বছরকে স্বাগত জানানো আর পুরাতনকে বিদায়ের এই সন্ধিক্ষণ আসলেই অর্থবহ। পহেলা বৈশাখ , বাঙালি সংস্কৃতির পরিচায়ক ও ধারক। পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ সুপ্রাচীন বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ। এটি কোটি বাঙালির প্রাণের উৎসব। বাংলাদেশে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ব্যাপক সাড়ম্বরে পহেলা বৈশাখ পালিত হয়।
পহেলা বৈশাখের রীতিনীতি, উৎসব আবহমান বাংলার এক অনন্য সংযোজন। শহর থেকে গ্রামে, দেশ থেকে বিদেশে সব বাঙালিই মেতে উঠে আনন্দ উল্লাসে। তরুণদের গায়ে লাল-সাদা পাঞ্জাবী থাকে, তরুণীরা শাড়ি পরে। ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি।খোঁপায় থাকে ফুল, হাতভর্তি কাচের চুড়ি। বাচ্চারা রঙিন জামা পরে মেলায় যাওয়ার বায়না ধরে। বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নে থাকে দই-মিষ্টি, বিন্নি ধানের খৈ, মোয়া, সন্দেশ, ভাত, তরকারি, ডাল, পান্তাভাত। থাকে হরেক রকম ভর্তা, ইলিশ মাছ ভাজি, ঠান্ডা পানীয় ইত্যাদি । পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিস্তৃতি ব্যাপক।
১৫২৬ সাল, পানিপথের প্রথম যুদ্ধ। সম্রাট বাবরের হাত ধরে ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করা হতো। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করতে হত। খাজনা আদায়ের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেন।
বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় থেকে। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে “বঙ্গাব্দ” বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়।
আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে। এরপর আবার পহেলা বৈশাখ উদযাপনের খবর পাওয়া যায় ১৯৩৮ সালে। তবে ১৯৬৭ সনের আগে ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। ১৯৮৮ সালের ১৯ জুন থেকে আমরা বাংলা একাডেমীর সুপারিশ করা পঞ্জিকা গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়। আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন শুরু হয়।
রমনার বটমূলে ১৩৭২ বঙ্গাব্দ থেকে পহেলা বৈশাখের উৎসবের আয়োজন করে আসছে ছায়ানট।১৯৮৯ সাল থেকে এই মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখে চালু রয়েছে। পরিশেষে দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল কামনা করেন।