বাংলাদেশ ০৯:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পড়াশোনা কম জানায় প্রশিক্ষণ থেকে নারীকে লাঞ্চিত করে বের করে দিলেন কৃষি কর্মকর্তা রাজিবপুরে মাঠের অভাব, অনলাইন জুয়া ও দখলদারদের রাজত্ব বিরল রোগে আক্রান্ত মোকাররমের পাশে “রশিদ মন্ডল ফাউন্ডেশন”- দুই ধাপে উপহার বিতরণ, উন্নত চিকিৎসার দাবি পরিবারের রৌমারীতে মডেল প্রেসক্লাবের শুভ উদ্বোধন জবি শাটডাউন, চার দফা দাবিতে কাকরাইলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গণঅনশন আজ মোহনগঞ্জে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষুব্ধ কুড়িগ্রামের ডিসি নুসরাত সুলতানা কুড়িগ্রাম (উলিপুরে) ব্রহ্মপুত্র নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ দুই ভাইয়ের মরা দেহ উদ্ধার কুড়িগ্রামে কৃষিজমি থেকে স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি পরিকল্পিত হত্যা রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়ন বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা 

বড়াইবাড়ির যুদ্ধে শহীদ হওয়া বীরেরা আজও প্রশ্ন করে- ১৮ এপ্রিল কি শুধু স্মৃতিতে থাকবে, স্বীকৃতিতে নয়?

Md Faridul Islam
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / 24

কিছু দিন আছে, যেগুলো ক্যালেন্ডারে লাল দাগ না থাকলেও মানুষের হৃদয়ে চিরকাল লাল হয়ে থাকে। ১৮ এপ্রিল ঠিক তেমন একটি দিন। একদিকে সীমান্ত রক্ষার গর্ব, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় অবহেলার তীব্র বেদনা। ২০০১ সালের এই দিনেই কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ি সীমান্তে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (তৎকালীন বিডিআর, বর্তমান বিজিবি) নিজেদের মাটি, মান আর মর্যাদা রক্ষায় বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সামরিক শক্তি ভারতের সীমান্ত বাহিনী বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে। দেশের মাটিকে রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন বীর সেনা। 

কিন্তু, এত বছর পরও, এই গর্বের দিনটি আমাদের জাতীয় স্বীকৃতি পায়নি। পায়নি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা। জাতির ইতিহাসে এই দিনটির মর্যাদা তুলে ধরার জন্য নেই কোনো নির্ধারিত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান, নেই জাতীয় পর্যায়ের কোনো স্মরণ। শুধু বড়াইবাড়ির বিজিবি ক্যাম্পে সীমিত শ্রদ্ধা, একটা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দেয়া, কিছু আবেগ আর একটুখানি কান্না।

২০০১ সালের এপ্রিল মাস। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। তারা ‘ছিটমহল’ বিতর্ক ও সীমান্ত চিহ্নিতকরণ ঘিরে একতরফা আগ্রাসন চালাতে শুরু করে। এই অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী স্থানীয় জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলে। গ্রামবাসী নারী-পুরুষ, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে রুখে দাঁড়ায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। তারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সীমান্ত রক্ষীদের সহায়তা করে, কেউ খাবার ও পানি সরবরাহ করে, কেউ আহতদের সেবা করে, আবার কেউ অস্ত্র হাতে নিয়ে সরাসরি প্রতিরোধে অংশ নেয়। শুরু হয় তীব্র সংঘর্ষ ও গোলাগুলি। ১৮ এপ্রিল, সংঘর্ষের চূড়ান্ত দিনে, এই সীমান্তের মাটিতে শহীদ হন বাংলাদেশের তিনজন বীর সেনা। তাদের আত্মত্যাগ ও জনগণের সাহসিকতা আজও জাতির গৌরবগাথা হিসেবে স্মরণীয়।

এই ঘটনা শুধু দুই দেশের সীমান্তেই নয়, কূটনৈতিক অঙ্গনেও তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করে। একপাশে ভারত দাবি তোলে তাদের জওয়ান নিখোঁজ হয়েছেন, অন্যদিকে বাংলাদেশ বারবার বলে, তাদের সীমান্তে অবৈধভাবে যারা অনুপ্রবেশ করেছিল, তাদের প্রতিহত করা হয়েছে বৈধভাবেই। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে, উভয় দেশের রাজধানী পর্যন্ত কাঁপে। শেষ পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

কিন্তু শহীদদের রক্তে রাঙানো সেই মাটি, সেই আত্মত্যাগ, জাতীয় ইতিহাসের পাতায় জায়গা পায় না। পায় না স্কুলের পাঠ্যবইয়ে, পায় না স্বাধীনতা দিবস কিংবা বিজয় দিবসের বীরদের তালিকায়।

আজ যখন আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বুক ফুলিয়ে বলি, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ তখন আমাদের মনে রাখা উচিত সেইসব বীর সন্তানদের কথা, যারা নিজেদের জীবন দিয়ে এই স্বাধীনতার প্রহরায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। বড়াইবাড়ির সেই সংঘর্ষ কেবল সীমান্ত নিয়ে বিবাদ ছিলো না, ছিল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধ।

মানুষ চায়, এই দিনটিকে ‘বড়াইবাড়ি দিবস’ হিসেবে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দেয়া হোক। মানুষ চায়, শহীদদের নাম যেন রাষ্ট্রের বুকে অমর হয়ে লেখা থাকে। মানুষ চায়, ১৮ এপ্রিল যেন জাতীয় ক্যালেন্ডারে স্থান পায়, যেন প্রজন্ম পরম্পরায় জানতে পারে, এই মাটি কাদের রক্তে রঞ্জিত।

কিন্তু সবচেয়ে করুণ বাস্তবতা হলো, এই ঘটনাটি আজও রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘জাতীয় দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। পায়নি সরকারি উদ্যোগে স্মরণানুষ্ঠান, রাষ্ট্রপতির বাণী, কিংবা সংসদে একটি আনুষ্ঠানিক শোকপ্রস্তাব। শহীদদের পরিবারগুলো আজও বেঁচে আছে একরাশ গর্ব আর সমান মাত্রার বেদনা নিয়ে। রাষ্ট্র তাদের সন্তানদের চিনতে পারেনি, স্বীকৃতি দিতে পারেনি।

প্রশ্ন জাগে, কেন? কেন এই নীরবতা? একটি স্বাধীন রাষ্ট্র তার সীমান্তরক্ষীদের আত্মত্যাগ স্বীকার করতে এত দ্বিধান্বিত কেন?

দেশের ইতিহাসে স্বাধীনতা যুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আধুনিক সময়ে দেশের সীমানা রক্ষায় জীবন দেয়া সেনারাও দেশের ইতিহাসের অংশ। বড়াইবাড়ি সংঘর্ষ এক আধুনিক ‘রণাঙ্গন’ যেখানে অস্ত্রের মুখে পিছু না হটে বিজিবি সৈনিকরা বলে দিয়েছিল, বাংলাদেশের সীমান্ত কোনো ‘নো-ম্যানস-ল্যান্ড’ নয়।

এই ১৮ এপ্রিল, আসুন আমরা সবাই মিলে একটিমাত্র দাবি তুলি ‘বড়াইবাড়ি দিবস’ কে জাতীয় দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিন।

এই দাবি কেবল শহীদদের পরিবার আর বড়াইবাড়ি বাসীর নয়, এটি গোটা জাতির। এটি আমাদের ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রকাশ। এটি রাষ্ট্রীয় অবচেতনাকে জাগিয়ে তোলার আহ্বান। এটি আমাদের সীমান্ত রক্ষীদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধার প্রকাশ।

ল্যাঃ নায়েক মোঃ ওয়াহিদ মিয়া, সিপাহী মোঃ মাহফুজুর রহমান, সিপাহী মোঃ আব্দুল কাদের তোমাদের রক্ত বৃথা যায়নি। আমাদের কণ্ঠে, কলমে, চোখের জলে আর দাবিতে তোমরা চিরজাগরুক।

এবার সময় এসেছে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রও তোমাদের প্রাপ্য মর্যাদা দিক। বড়াইবাড়ি দিবস হোক জাতীয় দিবস।

লেখক: মোঃ ফরিদুল ইসলাম–লেখক, সংবাদ ও সাংস্কৃতিক কর্মী।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বড়াইবাড়ির যুদ্ধে শহীদ হওয়া বীরেরা আজও প্রশ্ন করে- ১৮ এপ্রিল কি শুধু স্মৃতিতে থাকবে, স্বীকৃতিতে নয়?

আপডেট সময় : ০৭:৩৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

কিছু দিন আছে, যেগুলো ক্যালেন্ডারে লাল দাগ না থাকলেও মানুষের হৃদয়ে চিরকাল লাল হয়ে থাকে। ১৮ এপ্রিল ঠিক তেমন একটি দিন। একদিকে সীমান্ত রক্ষার গর্ব, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় অবহেলার তীব্র বেদনা। ২০০১ সালের এই দিনেই কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ি সীমান্তে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (তৎকালীন বিডিআর, বর্তমান বিজিবি) নিজেদের মাটি, মান আর মর্যাদা রক্ষায় বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সামরিক শক্তি ভারতের সীমান্ত বাহিনী বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে। দেশের মাটিকে রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন বীর সেনা। 

কিন্তু, এত বছর পরও, এই গর্বের দিনটি আমাদের জাতীয় স্বীকৃতি পায়নি। পায়নি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা। জাতির ইতিহাসে এই দিনটির মর্যাদা তুলে ধরার জন্য নেই কোনো নির্ধারিত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান, নেই জাতীয় পর্যায়ের কোনো স্মরণ। শুধু বড়াইবাড়ির বিজিবি ক্যাম্পে সীমিত শ্রদ্ধা, একটা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দেয়া, কিছু আবেগ আর একটুখানি কান্না।

২০০১ সালের এপ্রিল মাস। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। তারা ‘ছিটমহল’ বিতর্ক ও সীমান্ত চিহ্নিতকরণ ঘিরে একতরফা আগ্রাসন চালাতে শুরু করে। এই অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী স্থানীয় জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলে। গ্রামবাসী নারী-পুরুষ, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে রুখে দাঁড়ায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। তারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সীমান্ত রক্ষীদের সহায়তা করে, কেউ খাবার ও পানি সরবরাহ করে, কেউ আহতদের সেবা করে, আবার কেউ অস্ত্র হাতে নিয়ে সরাসরি প্রতিরোধে অংশ নেয়। শুরু হয় তীব্র সংঘর্ষ ও গোলাগুলি। ১৮ এপ্রিল, সংঘর্ষের চূড়ান্ত দিনে, এই সীমান্তের মাটিতে শহীদ হন বাংলাদেশের তিনজন বীর সেনা। তাদের আত্মত্যাগ ও জনগণের সাহসিকতা আজও জাতির গৌরবগাথা হিসেবে স্মরণীয়।

এই ঘটনা শুধু দুই দেশের সীমান্তেই নয়, কূটনৈতিক অঙ্গনেও তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করে। একপাশে ভারত দাবি তোলে তাদের জওয়ান নিখোঁজ হয়েছেন, অন্যদিকে বাংলাদেশ বারবার বলে, তাদের সীমান্তে অবৈধভাবে যারা অনুপ্রবেশ করেছিল, তাদের প্রতিহত করা হয়েছে বৈধভাবেই। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে, উভয় দেশের রাজধানী পর্যন্ত কাঁপে। শেষ পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

কিন্তু শহীদদের রক্তে রাঙানো সেই মাটি, সেই আত্মত্যাগ, জাতীয় ইতিহাসের পাতায় জায়গা পায় না। পায় না স্কুলের পাঠ্যবইয়ে, পায় না স্বাধীনতা দিবস কিংবা বিজয় দিবসের বীরদের তালিকায়।

আজ যখন আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বুক ফুলিয়ে বলি, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ তখন আমাদের মনে রাখা উচিত সেইসব বীর সন্তানদের কথা, যারা নিজেদের জীবন দিয়ে এই স্বাধীনতার প্রহরায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। বড়াইবাড়ির সেই সংঘর্ষ কেবল সীমান্ত নিয়ে বিবাদ ছিলো না, ছিল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধ।

মানুষ চায়, এই দিনটিকে ‘বড়াইবাড়ি দিবস’ হিসেবে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দেয়া হোক। মানুষ চায়, শহীদদের নাম যেন রাষ্ট্রের বুকে অমর হয়ে লেখা থাকে। মানুষ চায়, ১৮ এপ্রিল যেন জাতীয় ক্যালেন্ডারে স্থান পায়, যেন প্রজন্ম পরম্পরায় জানতে পারে, এই মাটি কাদের রক্তে রঞ্জিত।

কিন্তু সবচেয়ে করুণ বাস্তবতা হলো, এই ঘটনাটি আজও রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘জাতীয় দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। পায়নি সরকারি উদ্যোগে স্মরণানুষ্ঠান, রাষ্ট্রপতির বাণী, কিংবা সংসদে একটি আনুষ্ঠানিক শোকপ্রস্তাব। শহীদদের পরিবারগুলো আজও বেঁচে আছে একরাশ গর্ব আর সমান মাত্রার বেদনা নিয়ে। রাষ্ট্র তাদের সন্তানদের চিনতে পারেনি, স্বীকৃতি দিতে পারেনি।

প্রশ্ন জাগে, কেন? কেন এই নীরবতা? একটি স্বাধীন রাষ্ট্র তার সীমান্তরক্ষীদের আত্মত্যাগ স্বীকার করতে এত দ্বিধান্বিত কেন?

দেশের ইতিহাসে স্বাধীনতা যুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আধুনিক সময়ে দেশের সীমানা রক্ষায় জীবন দেয়া সেনারাও দেশের ইতিহাসের অংশ। বড়াইবাড়ি সংঘর্ষ এক আধুনিক ‘রণাঙ্গন’ যেখানে অস্ত্রের মুখে পিছু না হটে বিজিবি সৈনিকরা বলে দিয়েছিল, বাংলাদেশের সীমান্ত কোনো ‘নো-ম্যানস-ল্যান্ড’ নয়।

এই ১৮ এপ্রিল, আসুন আমরা সবাই মিলে একটিমাত্র দাবি তুলি ‘বড়াইবাড়ি দিবস’ কে জাতীয় দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিন।

এই দাবি কেবল শহীদদের পরিবার আর বড়াইবাড়ি বাসীর নয়, এটি গোটা জাতির। এটি আমাদের ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রকাশ। এটি রাষ্ট্রীয় অবচেতনাকে জাগিয়ে তোলার আহ্বান। এটি আমাদের সীমান্ত রক্ষীদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধার প্রকাশ।

ল্যাঃ নায়েক মোঃ ওয়াহিদ মিয়া, সিপাহী মোঃ মাহফুজুর রহমান, সিপাহী মোঃ আব্দুল কাদের তোমাদের রক্ত বৃথা যায়নি। আমাদের কণ্ঠে, কলমে, চোখের জলে আর দাবিতে তোমরা চিরজাগরুক।

এবার সময় এসেছে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রও তোমাদের প্রাপ্য মর্যাদা দিক। বড়াইবাড়ি দিবস হোক জাতীয় দিবস।

লেখক: মোঃ ফরিদুল ইসলাম–লেখক, সংবাদ ও সাংস্কৃতিক কর্মী।