রক্ত গোলাপ (থ্রিলার) – মানজারুল ইসলাম দুলাল
- আপডেট সময় : ০৭:১৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই ২০২৩
- / 214
বন্ধু আশিক ফোনে কথা বলে। কার সাথে বলে, সেটা বোঝা মুশকিল। অনার্সে উঠে ফোনে কথা বলবে না, এটা কি হয়? বলুক। কিন্তু এতো ধীর গতিতে কেন। তাই বলে, গরমের সময় ও কি কাঁথা মোরই দিয়ে থাকতে হবে নাকি। প্রেমিকা সবারই কম -বেশি থাকে। সবাই কথা বলে কিন্তু আশিকের মত নয়। রাত -দিন একাকার করে। শুধু কথা আর কথা। সময় মত ভাতও খায় না।
এই দিকে মাহমুদ শুধু মোবাইল নম্বর সংগ্রহের কাজ নিয়ে ব্যস্ত । বিভিন্ন ফ্লেক্সিলডের দোকানে দুই তিন দিন গেলেই, দোকানদারের সাথে গুড রিলেশন তৈরি হয়। মুখ ভরা মধু আর কথার মাঝে ছন্দ আছে এটা তার দক্ষতা। মাহমুদর সাথে কথা বলে কেউ বিরক্ত হয় বলে, মনে হয় না। তবে জসিমের কথা শুনে মানুষ বিরক্ত হয়। কথা বলার চাইতে মুখ দিয়ে ধুধুই বেশি বের হয়। যা অন্য জনের গায়ে- মুখে ছঁড়িয়ে ছিটে যায়। আবার কথার মাঝেই উত্তেজিত হয়ে যায় বারবার। একই কথা বারবার রিপিট করা তার জাতিগত সমস্যা। এই আচারণের জন্য জসিম থেকে মানুষ দূরে থাকতে বেশি পছন্দ করে। জসিমই কিন্তু আবার সবার থেকে মেধাবী ছাত্র। রেজাল্টের দিক দিয়ে সর্বদা প্রথম।
আশিকের সাথে জসিমের ঝগড়া চলছে দুদিন হলো।আশিক রূপা নামের একটা মেয়ের সাথে প্রেম করে। দীর্ঘ রাত পর্যন্ত কথা বলে, এই নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব। কারণ জসিম আর আশিক এক রুমে থাকে। এই ঝগড়া নতুন নয়, দু- তিন দিন পরপর লেগেই থাকে। আবার যখন মিল হয় তখন তাদের মাঝে এতো গভীর সম্পর্ক যা পৃথিবীর বুকে আর কারো নাই। এই দিকে সিফাত ছাত্র রাজনৈতিক নিয়ে ব্যস্ত। কোথায় সম্মেলন হবে, কত লোক নিতে হবে, সামনে কাউন্সিলে নিজের একটা ভালো পদ নিতে হবে, এই জন্য রাতদিন বড় বড় নেতাদের বাসাবাড়িতে ঘুরাঘুরি আর মিছিল মিটিং নিয়ে খুবই ব্যস্ত। সিফাত বাসা থেকে সকালে বের হয় আবার রাতে বাসায় ফেরে।তার সাথে কারো কোন রাগ অভিমান বেশি থাকে না। আবার সকল সমস্যার সমাধান এই সিফাতই করে থাকে। তীক্ষ্ণ বুদ্ধি আছে বলা যায়।সারাদিন মানুষ নিয়েই তার কাজ। মানুষ ম্যানেজ করা পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ। আর এই কাজটি সিফাত অতি সহজেই করতে পারে। পড়াশোনার দিক দিয়ে খুব বেশি ভালো না তবে আউট নলেজ অনেক ভালো।
১৭ মে, ছাত্র সংসদের সম্মেলন। সিফাত এই সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী। তাই সিফাত খুবই ব্যস্ত তার সহকর্মীদের নিয়ে। সিফাতের প্রতিদ্বন্দ্বী কাসেম রকি। কমিশনারের ছেলে কাসেম রকি। তাই সিফাত একটু আতংকে আছে, কি না জানি হয়। আর দুদিন আছে সম্মেলনের তাই সিফাত নেতাদের ম্যানেজ করা নিয়ে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। সব ছাত্ররা সিফাতকেই নেতা হিসাবে চায়। কিন্তু রকি বাহিনী হলো প্রভাবশালী। তাই সিফাতের বিপক্ষে বড় কিছু নেতা চলে গেছে। তবুও সিফাত মাঠ ছাড়েনি কারণ ছাত্ররাই তার একমাত্র ভরসা।
রাত থেকে সিফাতকে পাওয়া যাচ্ছে না, এই খবর ছড়িয়ে পড়লো বিদ্যুৎ গতিতে। শিক্ষার্থীরা হল থেকে বের হয়ে মশাল মিছিল বের করলো। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ব্যারিকেড দিলো। এই দিকে খালেক দৌড়ে এসে বলতে লাগলো, সিফাতের লাশ পাওয়া গেছে , পুকুর পাড়ে।
২য় পর্ব…….খুব শীগ্রই আসবে।
ঢাকা, ১৮ জুলাই (মনোযোগ প্রকাশ.কম)//এমজেড