চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে তীব্র ভাঙন হুমকিতে অর্ধশত কোটি টাকার সাবমেরিন ক্যাবল
- আপডেট সময় : ১২:৪৯:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩
- / 180
চিলমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারন করেছে। তীব্র ভাঙনের ফলে চিলমারী ইউনিয়নে গত ১সপ্তাহে গৃহ হারা হয়েছে শতাধিক পরিবার,ভেঙে গেছে শত শত একর আবাদী জমি। হুমকিতে রয়েছে অর্ধশত কোটি টাকা ব্যায়ে স্থাপিত বৈদ্যুতিক সাবমেরিন ক্যাবল।
জানা গেছে, উপজেলার চরাঞ্চল চিলমারী ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে গত ১সপ্তাহের ব্যবধানে ইউনিয়নটির বৈলমন্দিয়ারখাতা,শাখাহাতি,মনতোলা
কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যৎ সমিতির চিলমারী জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে,২০১৮ সালের জুন মাসে চিলমারী উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়নকৃত উপজেলা হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষনা করা হয়। এ ঘোষনার পর উপজেলার চরাঞ্চল চিলমারী ইউনিয়নকে বিদ্যুতের আওতায় নেয়ার লক্ষে ২০২১সালের মাঝামাঝি সময়ে সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন কল্পে জোড়গাছ ঘাট এলাকা থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের তলদেশ দিয়ে ৫কি.মি.দৈর্ঘের ৩টি তারের মাধ্যমে ব্যয়বহুল সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হয়। সাবমেরিন ক্যাবলের মূল্য ও স্থাপনসহ ওই প্রকল্পে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানা যায়। সাবমেরিনের ৫কি.মি.দৈর্ঘের তিনটি ক্যাবলের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীর জোড়গাছ ঘাটে ১কি.মি. এবং অপরপ্রান্ত শাখাহাতি এলাকায় এইচ পোলের কাছে ১কি.মি.ক্যাবল গচ্ছিত রাখা হয়েছিল। ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে শাখাহাতি এলাকার ওই ক্যাবল গচ্ছিত রাখার স্থানটি ভেঙে যাওয়ায় সাবমেরিনের ব্যয় বহুল প্রকল্পটি ধ্বংশ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের প্রচেষ্টায় স্থানীয় শতাধিক ব্যাক্তির স্বেচ্ছাশ্রমে প্রকল্পটি কোন রকমে টিকে থাকলেও সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিভাগের কোন তৎপরতা ছিল না বলে এলাকাবাসী জানায়।
শনিবার সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্থ সাবমেরিনের ক্যাবল টেনে নিয়ে সংরক্ষণ করতে ওই এলাকার ২০/২৫জন স্বেচ্ছা শ্রমিককে দেখা যায়। পাশ্ববর্তী রফিয়াল চৌকিদার,জাহানারা বেগম,এছাহক আলী,আ.রাজ্জাক,নুর মোহাম্মদসহ অনেককে তাদের বাড়ী-ঘর ভেঙে অন্যত্র নিতে দেখা গেছে। এসময় নুর মোহাম্মদের স্ত্রী রজিনা বেগম বলেন,নদীর ভাঙন এত তীব্র হয়েছে যে,ঘর-বাড়ী ভেঙে নেয়ারও সময় দেয় না। সামনে নদী,তাই আমরা ঘর ভাঙলাম। কিন্তু কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিব তার ঠিকানা নেই। আপাতত ঘরগুলো ভেঙে পাশ্ববর্তী রাস্তায় নিয়ে রাখছি। আ.রশিদ মজমুল হক,মহশিন আলী,মোকছেদ আলী, জয়নুল আবেদীন,নুরুল হকসহ অনেকে জানান,গত এক সপ্তাহের নদী ভাঙনে শতাধিক বাড়ী-ঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধ করা না হলে মানচিত্র থেকে চিলমারী ইউনিয়নটি হারিয়ে যাবে। নদী ভাঙন প্রতিরোধ ও সাবমেরিন ক্যাবল পুনঃমেরামতের জন্য জোড় দাবী জানান তারা।
চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান মো.আমিনুল ইসলাম জানান,ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে গত ১সপ্তাহে শতাধিক বাড়ী ও শত শত একর আবাদী জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যায়ে স্থাপিত সাবমেরিন ক্যাবলটি ধ্বংশেল দ্বারপ্রান্তে গেলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোন কার্যকরী পদক্ষেপ ছিল না। নিজ উদ্যোগে প্রতিদিন শতাধিক স্বেচ্ছা শ্রমিকের সমন্বয়ে ৫দিনের নিরলস চেষ্টায় কিছু ক্যাবল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুত সমিতির চিলমারী জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মো.মোস্তফা কামাল বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও জনগনের সহায়তায় ক্যাবলগুলি উদ্ধার করে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম, ২১ আগস্ট (মনোযোগ প্রকাশ.কম)//এমএইচ