প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা শুধু দুটি গণমাধ্যমের ওপর আঘাত নয়: শশী থারুর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১২ পিএম
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সহিংস ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং কংগ্রেস দলীয় লোকসভার সদস্য শশী থারুর। তিনি বলেছেন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা শুধু দুটি গণমাধ্যমের ওপর আঘাত নয়; বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বহুমাত্রিক সমাজব্যবস্থার ভিত্তির ওপর মারাত্মক আঘাত।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এসব মন্তব্য করেন শশী থারুর। পোস্টে তিনি লেখেন, বাংলাদেশে পরিকল্পিতভাবে গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। একই সঙ্গে তিনি প্রথম আলোর সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামসহ সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন।
আসন্ন ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে চলমান সংঘাত, সহিংসতা ও অসহিষ্ণুতার পরিবেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য অশুভ সংকেত বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার মতে, এমন পরিস্থিতি একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
শশী থারুর আরও বলেন, ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে খুলনা ও রাজশাহীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের ভিসা কার্যক্রম স্থগিত হওয়া অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এতে শিক্ষার্থী, রোগী ও সাধারণ পরিবারগুলো সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যারা সীমান্ত পারাপার স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।
একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন শশী থারুর। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং কোনোভাবেই সংঘবদ্ধ হামলাকারীদের ছাড় দেওয়া যাবে না। একই সঙ্গে কূটনৈতিক মিশনগুলোকে নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে সুরক্ষা দিতে হবে, যাতে জনগণের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক অটুট থাকে।
শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণহীন সহিংসতার পথ পরিহার করে গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে উত্তরণকাল পার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরাসরি নেতৃত্ব প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পোস্টের শেষাংশে শশী থারুর লেখেন, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা শুধু দেশের জন্য নয়, পুরো অঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এমন একটি পরিবেশ তৈরি হবে যেখানে জনগণের মতামত সহিংসতার মাধ্যমে নয়, বরং শান্তিপূর্ণভাবে ব্যালটের মাধ্যমে প্রতিফলিত হবে।