বিগত ১১৭ বছরের সব দলিল অনলাইনে যাচ্ছে, ভূমি মালিকদের জন্য নতুন যুগের সূচনা

মনোযোগ প্রকাশ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১৯ এএম

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে ভূমি মালিকদের জন্য এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের দ্বার উন্মোচন হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কাগজভিত্তিক দলিল ব্যবস্থায় চলা ভোগান্তির অবসান ঘটাতে সরকার এবার দলিল রেজিস্ট্রেশন ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়া পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ নিয়েছে। এর ফলে ১৯০৮ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দেশের সব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সংরক্ষিত দলিল ধাপে ধাপে স্ক্যান করে অনলাইনে আনা হবে।

নতুন এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভূমি মালিকরা বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে নিজেদের দলিল অনলাইনে খুঁজে দেখা, যাচাই করা এবং প্রয়োজন হলে ডাউনলোড করতে পারবেন। এতে ভূমি মালিকদের জন্য শুরু হচ্ছে এক নতুন স্বচ্ছ, নিরাপদ ও হয়রানিমুক্ত সেবা ব্যবস্থা।

সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, সব দলিল একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষিত থাকবে, যেখানে সাধারণ নাগরিকরা নাম, দলিল নম্বর বা খতিয়ান নম্বর দিয়ে অনুসন্ধান করতে পারবেন। ইতিমধ্যে দেশের কয়েকটি জেলায় পাইলট প্রকল্প চালু হয়েছে। তবে ১৯৪৭ ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধকালীন সময়ে হারিয়ে যাওয়া কিছু দলিল অনলাইনে পাওয়া যাবে না। যাদের কাছে এসব পুরোনো দলিলের কপি রয়েছে, তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দিয়ে অনলাইন অন্তর্ভুক্তির আবেদন করতে পারবেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই অনলাইন দলিল ব্যবস্থার মাধ্যমে জমি জালিয়াতি ও দুর্নীতি অনেকাংশে বন্ধ হবে। আগে অনুপস্থিত মালিকদের জমি জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রি হওয়ার ঘটনাও ঘটত, কিন্তু এখন অনলাইন যাচাই প্রক্রিয়ায় এসব প্রতারণা রোধ করা সম্ভব হবে।

আইনজীবী তৌফিক আহমেদ বলেন, “আগে দলিল খোঁজার জন্য রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে ঘুষ দিতে হতো ১,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত। এখন সরকারি নির্ধারিত ফি মাত্র ২০ টাকা। এই নতুন সিস্টেম দুর্নীতি ও হয়রানির পথ বন্ধ করবে।”

ভূমি মালিকদের করণীয়:

নতুন অনলাইন সিস্টেম চালু না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

অনলাইনে না পাওয়া দলিলের কপি নিজে থেকে জমা দিন।

জাল দলিল কোনোভাবেই অনলাইনে গ্রহণযোগ্য হবে না।

দলিল হারানোর ক্ষেত্রে প্রতারণা এড়াতে অনলাইনে নিবন্ধনের আবেদন করুন।

দীর্ঘমেয়াদী সুফল:

জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও প্রতারণা কমবে।

নাগরিক সেবা আরও দ্রুত ও সহজ হবে।

প্রবাসীরা সহজে অনলাইনে দলিল সংগ্রহ করতে পারবেন।

সরকারের ভূমি ব্যবস্থাপনা হবে স্বচ্ছ ও আধুনিক।

এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় শুরু হবে ডিজিটাল স্বচ্ছতার নতুন যুগ, যেখানে নাগরিকের সম্পত্তি সুরক্ষিত থাকবে এবং ঘুষ বা হয়রানির দিন শেষ হবে।

 

যোগাযোগের ঠিকানা:

কুড়িগ্রাম অফিস: কলেজ রোড (রাজিবপুর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন),
চর রাজিবপুর, কুড়িগ্রাম।

ঢাকা অফিস: ২/এ, কালাচাঁদপুর মেইন রোড, ঢাকা- ১২১২

ইমেইল: monojogprokash2021@gmail.com

মোবাইল: +8801948-645226