একাকিত্বের সেরা সঙ্গী: আপনার পোষা বিড়াল

মনোযোগ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪২ পিএম

শান্ত একটি দুপুর, জানালার পাশে বসে একাকিত্বে ডুবে থাকা এক তরুণী হঠাৎ লক্ষ্য করেন, তার পোষা বিড়াল কোলের ওপর উঠে গরগর শব্দ করছে। মুহূর্তেই মনটা হালকা হয়ে যায়, চিন্তার ভার কমে আসে। এটি কেবল গল্প নয়; বাস্তবেও বিড়ালপোষা মানুষের জীবনে এমন দৃশ্য প্রতিদিন ঘটে।
বিড়াল শুধু আবেগের সঙ্গী নয়, এটি মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য জীবন্ত থেরাপির মতো কাজ করে। আধুনিক গবেষণা বলছে, বিড়ালের উপস্থিতি প্রশান্তি আনে, একাকিত্ব কমায় এবং শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৯ মিলিয়ন পরিবারে বিড়াল রয়েছে, যা তাদের জনপ্রিয়তা ও উপকারিতার প্রমাণ।
মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিড়ালের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা সঙ্গ দেয়, নিঃসঙ্গতা ও উদ্বেগ কমায়। বিড়ালের খুনসুটি, আচরণ এবং মজার কাণ্ড শিশু থেকে বড় সকলের মুখে হাসি ফোটায়। গবেষণা অনুযায়ী, বিড়ালপোষা মানুষ সাধারণত কম একাকিত্ব অনুভব করেন, এবং শান্ত বা বন্ধুত্বপূর্ণ চরিত্রের বিড়ালের প্রতি তারা আরও আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন।
শারীরিক দিকেও বিড়ালের উপকারিতা রয়েছে। তাদের সঙ্গে সময় কাটালে ‘কর্টিসল হরমোন’ কমে, যা মানসিক চাপ কমায়। হৃৎস্পন্দন ও রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। মাত্র ১০ মিনিট খেলার মাধ্যমে শরীরের ছন্দ ফিরে আসে এবং মন শান্ত হয়। ১২০ দম্পতির ওপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিড়ালপোষা দম্পতিরা মানসিক চাপের পরিস্থিতিতেও স্থির থাকেন, এবং চ্যালেঞ্জকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেন।
বিড়ালের গরগর শব্দও বিশেষ উপকার নিয়ে আসে। এর কম্পন ২৫–১৫০ হার্টজের মধ্যে থাকে, যা বিশেষভাবে ২৫–৫০ হার্টজ ফ্রিকোয়েন্সিতে হাড় ও পেশি পুনর্গঠনে সহায়ক। চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, এই কম্পন হাড় দ্রুত সেরে ওঠাতেও সাহায্য করে। অর্থাৎ, বিড়াল গরগর করলে শুধু নিজেদের আরাম করে না, আমাদের শরীরকেও উপকার করে।
এছাড়া বিড়ালপোষা মানুষ সাধারণত কল্পনাপ্রবণ, কৌতূহলী ও সংবেদনশীল হয়ে থাকেন। বিড়াল একটি রুটিন তৈরি করে, যা মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক। অনেক মালিক তাদের বিড়ালকে বাইরে নিয়ে যান, যাতে প্রাণী নিরাপদে প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকে এবং মালিকও মানসিক প্রশান্তি পান।
আরও দেখা গেছে, বিড়াল হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতেও সহায়ক।
সব মিলিয়ে, বিড়ালপোষা কেবল ভালোবাসা নয়—এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত উপকারী অভ্যাস। তাই বিড়ালপ্রেমীদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে সুখবর: আপনার পোষা বিড়াল আপনাকে ভালোবাসার পাশাপাশি সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে।
তথ্য সূত্র: হেলথলাইন