শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে কলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

মনোযোগ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৭ পিএম

অনেক অভিভাবক মনে করেন, কলা খেলে শিশু ঠান্ডা বা সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হতে পারে। তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এমন প্রমাণ খুবই কম। কলা সরাসরি সর্দি বা কাশি সৃষ্টি করে না। এটি কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে শিশুর আগে থেকেই সর্দি থাকলে, শ্লেষ্মা কিছুটা বাড়াতে পারে। কলার মধ্যে প্রচুর পটাশিয়াম, ফাইবার ও ভিটামিন সি থাকে, যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বিশ্বজুড়ে কলা বাচ্চাদের জন্য আদর্শ খাবার হিসেবে স্বীকৃত।
কবে শিশুকে কলা খাওয়ানো উচিত:
দিনের বেলায় বা সকালের নাস্তায় খাওয়া ভালো।
গরম দুধ বা গরম খাবারের সঙ্গে দিলে ঠান্ডা অনুভূতি কম হয়।
গরমকালে শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
কোন বয়সে কীভাবে খাওয়ানো উচিত:
৬ মাসের পর ম্যাশ বা পেস্ট করে খাওয়ানো যায়।
১ বছরের পর ছোট ছোট টুকরো করে খাওয়ানো নিরাপদ।
স্কুলগামী শিশুর জন্য এটি পারফেক্ট স্ন্যাকস।
কবে এড়িয়ে চলা উচিত:
শিশুর আগে থেকেই ঠান্ডা বা কাশি থাকলে।
রাতে বেশি পরিমাণে খাওয়ার সময়।
ঠান্ডা পরিবেশে ফ্রিজের কলা খাওয়ার সময়।
কলার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা (প্রতি ১০০ গ্রাম কলায়):
শক্তি (ক্যালরি): ৮৯ ক্যালরি – দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে।
প্রোটিন: ১.১ গ্রাম – পেশি গঠনে সাহায্য করে।
চর্বি: ০.৩ গ্রাম – ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
কার্বোহাইড্রেট: ২২.৮ গ্রাম – তাৎক্ষণিক শক্তির উৎস।
ফাইবার: ২.৬ গ্রাম – হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়ক।
চিনি (প্রাকৃতিক): ১২.২ গ্রাম – প্রাকৃতিক মিষ্টতা, রিফাইন্ড সুগারের বিকল্প।
ভিটামিন সি: ৮.৭ মি.গ্রা – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ভিটামিন বি৬: ০.৪ মি.গ্রা – মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ও হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়ক।
ফোলেট (B9): ২০ মাইক্রোগ্রাম – কোষ বিভাজনে সহায়ক।
পটাশিয়াম: ৩৫৮ মি.গ্রা – রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।
ক্যালসিয়াম: ৫ মি.গ্রা – হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়ক।
ম্যাগনেসিয়াম: ২৭ মি.গ্রা – পেশি ও স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখে।
ফসফরাস: ২২ মি.গ্রা – হাড় ও দাঁতের জন্য প্রয়োজনীয়।
আয়রন: ০.৩ মি.গ্রা – হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়ক।
জিংক: ০.১৫ মি.গ্রা – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
সোডিয়াম: ১ মি.গ্রা – শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখে।
কলা শিশুদের জন্য সুরক্ষিত, পুষ্টিকর এবং সহজপাচ্য খাবার। সঠিকভাবে সময় ও পরিমাণ অনুসারে খাওয়ালে এটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।